সিলেটের লালদিঘী হকার্স মার্কেটের দুই ব্যবসায়ীকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।
বৃহস্পতিবার জেলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ করেন লালদিঘী (পুরাতন) হকার্স মার্কেটের দোকান মালিক ব্যবসায়ী সমিতির নেতারা।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুস ছোবহান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, মেসার্স হারুন অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী মো. হেলেম মিয়া ও গোলাম নবী অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী ও সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য খোকন মিয়া একটি প্রতারক ও কুচক্রী মহলের কবলে পড়ে বিনাদোষে কারাগারে রয়েছেন।
আব্দুস ছোবহান বলেন, ব্যবসায়ী মো. হেলেম মিয়ার কাছ থেকে প্রতারণা করে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়ে বিষয়টিকে ধামাচাপা দিতে উল্টা মিথ্যা তথ্য দিয়ে মামলা করেন ইব্রাহীম ওরফে মাহলম। মামলায় দুই ব্যবসায়ীকে চাঁদাবাজ ও ছিনতাইকারী আখ্যায়িত করে মামলা দিয়ে জেলে পাঠিয়েছে ভয়ঙ্কর এ জালিয়াত চক্র।
মামলার বাদী মো. ইব্রাহীম মিয়ার সাজানো মামলায় আসামি করা হয়েছে মো. খোকন মিয়া, মো. হেলেম মিয়া, মো. ইউনুস মিয়া, মো. আলমগীর, মো. আলামিনসহ অজ্ঞাতনামা ৮-১০ জনকে।
তিনি আরও বলেন, হেলেম মিয়া লালদিঘীরপাড় রোডে একটি দোকানকোঠা কিনতে চাইলে নরসিংদীর মো. ইব্রাহীম মিয়া তাকে সহযোগিতার আশ্বাস দেন। এ সময় কৌশলি ইব্রাহীম ‘ভুয়া দোকানকোঠা’ দেখিয়ে ৭৭ লাখ টাকা মূল্য নির্ধারণ করে দালালদের আরও ৮ লাখ টাকা দেওয়ার চুক্তিসহ মোট ৮৫ লাখ টাকা মূল্য সাব্যস্ত করেন। সে অনুযায়ী বায়না বাবদ মো. ইব্রাহীম মিয়াকে ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা দেন মো. হেলেম মিয়া। যার মধ্যে ৫ লাখ টাকা প্রিমিয়ার ব্যাংক, লালদিঘীরপাড় শাখার চেকের মাধ্যমে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ইব্রাহীম মিয়া এ টাকা নিজে উত্তোলন করেন।
ব্যবসায়ী আব্দুস ছোবহান বলেন, মো. হেলেম মিয়া বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন, ভুয়া বায়নাপত্র সম্পাদন করেছেন। তখন তাকে দোকানকোঠা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে ইব্রাহীম বায়নাকৃত ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। সময় মতো টাকা ফেরত না দিয়ে মো. ইব্রাহীম মিয়া ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের কাছে হেলেম মিয়ার বিরুদ্ধে জালিয়াতির একটি সাজানো অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে মো. হেলেম মিয়া প্রকৃত অবস্থা ব্যাখ্যা করে লিখিতভাবে কাউন্সিলরের কাছে একটি অভিযোগ জমা দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৩ জানুয়ারি কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম মুনিমের অফিসে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়টি সুরাহা হওয়ার আগেই ইব্রাহীম মিয়া বিচার প্রত্যাহার করে নেন এবং এরই ফাঁকে হেলেম মিয়াসহ কয়েকজন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা করেন।
গত ১৭ ফেব্রুয়ারি মো. হেলেম মিয়াকে পুলিশ গ্রেফতার করে। সেইসঙ্গে হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ী গোলাম নবী অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী খোকন মিয়াকেও গ্রেফতার করা হয়।
তিনি বলেন, ইব্রাহিম মিয়া একজন প্রতারক ও অসৎ ব্যক্তি। এই চক্র অনেক ব্যবসায়ীর সঙ্গে এরকম প্রতারণা করেছে। মো. হেলেম মিয়ার বিষয়টি সমাধানের লক্ষ্যে সমিতিরি পক্ষ থেকে বারবার মো. ইব্রাহীম মিয়াকে আহ্বান জানানো হলেও তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেননি। বিষয়টি আমরা জেলা ব্যবসায়ী ঐক্য কল্যাণ পরিষদ ও মহানগর ঐক্য কল্যাণ পরিষদকে অবগত করেছি।
ব্যবসায়ী হেলেম মিয়ার ১৩ লাখ ৭০ হাজার টাকা ফেরত ও প্রতারক চক্রের বিচার দাবি করেছেন হকার্স মার্কেট ব্যবসায়ী নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- সমিতির সভাপতি শেখ মো. কবির আহমদ, সিনিয়র সহ-সভাপতি সামছু মিয়া, সহ-সভাপতি হাজী দেলওয়ার মিয়া, দপ্তর সম্পাদক মো. শাহজাহান আহমদ, কার্যকরী সদস্য মো. হেলাল আহমদ, মো. মুছা আহমদ চৌধুরী ও কাওছার আহমদ, ব্যবসায়ী সিদ্দিকুর রহমান জুম্মান, আব্দুল জলিল, মো. সামছুদ্দিন মেম্বার ও মো. গোলাম হাক্কানী সুমন প্রমুখ।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।